কিভাবে আপনার বাচ্চা বড় হয়

কিভাবে আপনার বাচ্চা বড় হয়

২৮তম সপ্তাহে, আপনার বাচ্চা এখন ৩৬ সে.মি. লম্বা এবং ওজন প্রায় ১১০০ গ্রাম। এর চোখের পাতা খোলা থাকে এবং এর ফুসফুস পর্যাপ্ত বৃদ্ধি পায় যাতে আপনার বাচ্চা জরায়ুর বাইরে শ্বাস নিতে পারে – যদিও এই সময় জন্ম নেয়া বাচ্চার শ্বাস নেয়ার জন্য সম্ভবত সাহায্য লাগতে পারে। ২৮তম সপ্তাহে জন্ম নেয়া একটি বাচ্চার বেচে থাকার ভালো সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু তারপরও প্রতিবন্ধী হওয়ার একটি ঝুঁকি থেকে যায়।

৩২তম সপ্তাহে, আপনার বাচ্চা ৪১ সে.মি. লম্বা এবং ওজন প্রায় ১৮০০ গ্রাম। এই সময়ে জন্ম নেয়া বাচ্চার চোষণ করা শিখতে হবে ।  ৩৬তম সপ্তাহে, আপনার বাচ্চা ৪৭.৫ সে.মি. হয় এবং ওজন প্রায় ২৬০০ গ্রাম হয়। ৪০তম সপ্তাহে, এটি ৫০ সে.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি হয় এবং ওজন প্রায় ৩৪০০ গ্রাম হয়।

শিশুর দেহের মোমের আবরণ বা ভারনিক্স মোটা হতে থাকে। গর্ভস্থ শিশুর শরীরে ফ্যাট বৃদ্ধি পায়। ফলে তার আকার বড় হতে থাকে এবং নড়াচড়া করার স্থান কমে যায়। নড়াচড়ার গতি কমে গেলেও মা নড়াচড়া অনুভব করতে পারেন ঠিকই

মস্তিষ্ক এখন বাচ্চার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শরীর এখন মাথার আকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।নবম মাসে ভ্রূণের আবাসস্থল প্রসারিত হয় এবং জন্মের জন্য ভ্রুনের মাথা শ্রোণি অঞ্চলের নীচের দিকে ঘুরে যায় (হেড ডাউন পজিশন)। ফুসফুস তার কাজ পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত হয়ে যায়। ভ্রূণের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। আপনার বাচ্চা এখন জন্মানোর জন্য প্রস্তুত।

আমার সাথে কি ঘটছে?

কিছু কিছু ক্ষেত্রে,এই চূড়ান্ত তিন মাস প্রথম তিন মাসের মতো। আপনি অনেকটা ক্লান্ত এবং অনেক আবেগপ্রবণ হতে পারেন। আপনার পেটে এবং পিঠের/কোমরেরবেদনা এবং ব্যাথা হওয়া স্বাভাবিক। যতটুকু পারেন বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করুন।

আপনার বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে। গর্ভাবস্থার তৃতীয় তিন মাসে গর্ভবতী নারীর জরায়ু বড় হয়ে ডায়াফ্রামে চাপ সৃষ্টি করে (ডায়াফ্রাম হচ্ছে বুক ও পেটের মাঝামাঝি অবস্থিত পেশী যা শ্বাস নেয়া ও নিঃশ্বাস ছাড়ার সাথে জড়িত)। ফুসফুস পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রসারিত হতে পারেনা বলে শ্বাসকষ্ট হয়।

আপনি শারিরীকভাবে অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন। আপনার পায়ের উপরের অংশে বা আপনার শ্রোণী এবং কোমরের নীচের দিকে ব্যাথা হতে পারে। আপনার শ্রোণীর সন্ধিবন্ধনীগুলো প্রসারিত হওয়ার কারণে এমন হয়। যদি ব্যাথা অনেক মারাত্মক হয় তাহলে আপনার ধাত্রী বা ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। বিশ্রাম এবং সাধারণ ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি বিশ্রাম নেন এবং সক্ষম থাকেন, প্রসবের সময় আপনি অনেক ভালো মানিয়ে নিতে পারবেন। এখন থেকে ঘুমের সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক।

গর্ভবতী মায়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ন সমস্যা পায়ে পানি আসা। একনাগারে একই জায়গায় অনেকক্ষন বসে থাকলে বা পা ঝুলিয়ে বসলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই কিছুক্ষন পরপর বসার ধাঁচ পরিবর্তন করুন কিন্তু খেয়াল রাখবেন কোনভাবেই যেন তা পেটের উপর প্রভাব না ফেলে।

শেষ মাসে:

এই সময় আপনার সারাজীবনের জন্য গর্ভবতী মনে হবে। অনেক মহিলা এই সময় কাজ ছেড়ে দেয়। এই সময়ে ধীরগতি হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু আপনি হঠাৎ হঠাৎ আপনার মধ্যে শক্তির ঝলক দেখতে পারেন। এগুলোর সবই ‘nesting’ –এর অংশ – কিছু মহিলা বাচ্চা জন্মানোর আগেই সকল প্রস্তুতি নেয়ার যে ইচ্ছা পোষণ করে এটি হোল সেটাই।

আপনার বাচ্চা আপনার শ্রোণীতে পতিত হতে পারে। এটি আপনাকে শ্বাস নেয়া সহজ করবে, কিন্তু আপনার মূত্রথলিতে অতিরিক্ত চাপ দিবে যার ফলে আপনাকে বারবার টয়লেটে যেতে হবে। যদি আপনি প্রসবের উপসর্গগুলো কি এবং কখন হাসপাতালে যেতে হবে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত না হোন তাহলে আপনার ধাত্রী বা ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করুন।

আপনার বাচ্চা ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহের যেকোন সময় জন্মাতে পারে (১০০ জন বাচ্চার মধ্যে মাত্র ৫ জন জন্মের সম্ভাব্য তারিখে জন্ম নেয়)।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বেস্ট ফ্রেন্ড যখন বউ

একজন বেশ্যা এর গল্প

হাইড্রাসটিস ক্যানাডেনসিস 🌍Hydrastis Canadensis